সেনা পোশাকে যুদ্ধে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৫০ এএম, ২৮ নভেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৫ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। এই পোশাকে সেনাদের সঙ্গে বিদ্রোহী টাইগ্রে বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন তিনি। এমন ভিডিও পোস্ট করে তিনি বিজয় দাবি করেছেন। তিনি বলেছে, তার সেনাদের মনোবল চাঙ্গা আছে। অন্যদিকে পিছু হটেছে টাইগ্রে বাহিনী। রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিওতে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহে তিনি সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। তারপর এটাই তার প্রথম বার্তা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এর আগেই তিনি যুদ্ধে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
গত বুধবার তিনি যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন বলে জানানো হয়। তার আগে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব তিনি তার ডেপুটিদের হাতে ন্যস্ত করেন। সেই যে যুদ্ধে যাওয়া, তারপর এটাই তার প্রথম ছবি বা ভিডিও প্রকাশ। গত শুক্রবার এই ভিডিওতে দেখা যায়, ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আবি আহমেদ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। তার পরনে সেনাবাহিনীর পোশাক। রেকর্ড করা বিবৃতিতে তিনি বলেন, শত্রুদের কবর রচনা না করা পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ ছাড়বো না। আমাদের জীবন উৎসর্গের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর ইথিওপিয়া দেখতে চাই। তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে কাসাগিটা এলাকার দখল নিয়েছে তার সেনারা। ট্রাইগ্রের পাশেই আফার অঞ্চলে ছিফ্রা এবং বুরকা শহর দখল করে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন তারা।
এ সম্পর্কে আবি আহমেদ বলেন, আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকবে না শত্রুরা। আমরা জয়ী হবোই। উল্লেখ্য, সরকার যুদ্ধ নিয়ে রিপোর্টিংয়ের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। সেনাদের অগ্রযাত্রা, যুদ্ধক্ষেত্রের ফলাফল বা পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি তথ্য শেয়ারে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। তার ফলে কোনো মিডিয়া এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারেনি। ট্রাইগ্রে অঞ্চল থেকে ক্ষমতাসীন দল ট্রাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে (টিপিএলএফ) সরিয়ে দিতে ২০২০ সালের নভেম্বরে সেখানে সেনা পাঠান আবি আহমেদ। তারপর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে লড়াই তীব্র হয়েছে। আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসেন ২০১৮ সালে। তার আগে প্রায় তিন দশক কেন্দ্রীয় সরকারে আধিপত্য বিস্তার করে ছিল টিপিএলএফ। ২০২০ সালে সেনা পাঠিয়ে দ্রুততার সঙ্গে টাইগ্রে অঞ্চলের রাজধানী মেকেলে দখল করে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। কিন্তু এর পরের জুনের মধ্যে ট্রাইগ্রে বাহিনী তাদের বেশির ভাগ অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী আমহারা এবং আফার অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হয়। এ থেকে যুদ্ধ ভয়াবহ থেকে আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অবর্ণনীয় এক মানবিক সঙ্কট। জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক কর্মসূচি ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) শুক্রবার বলেছে, দেশটির উত্তরে খাদ্যের প্রয়োজন এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৯০ লাখ। হাজার হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে। টাইগ্রে, আমহারা এবং আফার অঞ্চলে উপায়হীন মানুষের কাছে জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে সাহায্যকর্মীরা।