আফগানিস্তান ছাড়লো শেষ মার্কিন সেনা, সমাপ্ত ২০ বছরের যুদ্ধ, তালেবানের উল্লাস
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:২০ পিএম, ৩১ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০৯ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সেনাদের নিয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সামরিক বিমান। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো ২০ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধের।
মার্কিন সেনারা আকাশে উড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী কাবুলসহ সারাদেশে উল্লাস প্রকাশ করেছে তালেবানরা। রাতের আকাশে তারা ফাঁকা গুলি, আতশবাজি ছুড়ে সেলিব্রেট করেছে নিজেদের জয়। তারা নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা দিয়েছে। অনলাইন বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সি-১৭ বিমান ত্যাগ করে। এ তথ্য দিয়েছেন ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি। তবে এখনও যারা কাবুল ত্যাগ করতে পারেননি, তাদের জন্য কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি লিখেছে, সর্বশেষ বিমানটি কাবুল ত্যাগ করার পর কাবুলে তালেবানদের বিজয়সূচক গুলির আওয়াজ শোনা গেছে। রাতের কাবুলে রাস্তায় রাস্তায় বন্দুক হাতে উল্লাস করতে দেখা যায় তালেবান সদস্যদের। এই বিমানটির কাবুল ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ এবং তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ব্যাপক উদ্ধার অভিযানের অবসান হলো।
গত ১৫ই অগাস্ট একটিও গুলি খরচ না করে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবানরা। তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি একজন সেনা সদস্য বা অন্যকেউ। এ যেন স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ ছিল। সে সময় থেকেই মূলত কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার কার্যক্রম চলছিল।
জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং জোট বাহিনীর বিমানগুলোতে করে সব মিলিয়ে এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজারের বেশি বাসিন্দা কাবুল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন।
এই ঘোষণা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটনে বলেছেন, এটি ছিল 'ব্যাপক সামরিক, কূটনৈতিক এবং মানবিক কর্মযজ্ঞ এবং যা যুক্তরাষ্ট্র অনেক চ্যালেঞ্জের সাথে বাস্তবায়ন করেছে। নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। সামরিক মিশন সমাপ্ত হয়ে নতুন এক কূটনৈতিক মিশন শুরু হল।
তবে তিনি এও বলেছেন যে, তালেবানকে বৈধতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কিনা এবং নাগরিকদের ভ্রমণে স্বাধীনতা দেয়া, নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দমন করছে কিনা-এসব বিষয় বিশ্ববাসীর নজরে থাকবে।
তিনি জানিয়েছেন, কাবুলে কূটনৈতিক মিশন স্থগিত করে কাতারের রাজধানী দোহা’য় নিয়ে যাওয়া হলেও, আমেরিকান নাগরিক এবং যে আফগানদের যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট রয়েছে, তারা চাইলে তাদের আফগানিস্তান ছাড়তে সহায়তা করবে। গত ১৭ দিন ধরে চলা এই উদ্ধার অভিযানে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারেন।
২০০১ সালের সাতই অক্টোবর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। কারণ তখন দেশটিতে ক্ষমতায় থাকা তালেবান নেতারা আল-কায়েদার ওসামা বিন লাদেনকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। সেই বছর নভেম্বরে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় মার্কিন জোট সমর্থিত তালেবান বিরোধী বাহিনী নর্দার্ন অ্যালায়েন্স।