জালালাবাদ শহরের দখল নিল তালেবান

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদের দখল নিয়েছে তালেবান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। 

আজ রবিবার (১৫ আগস্ট) সকালে শহরটির দখল নেয় তালেবান। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই তালেবান শহরটির দখল নিতে সক্ষম হয় বলে জানায় রয়টার্স।

জালালাবাদ আফগানিস্তানের পঞ্চম বৃহত্তম শহর। পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের রাজধানী শহর জালালাবাদ। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে জালালাবাদের দূরত্ব ৮০ মাইল। জালালাবাদ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২০টির রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিল তালেবান।

আফগান কর্মকর্তারা জানান, জালালাবাদ শহর দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সংযোগ সড়কের দখলও তালেবানের হাতে গেছে।

জালালাবাদভিত্তিক এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, শহরটিতে এখন কোনো লড়াই নেই। কারণ, গভর্নর তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বেসামরিক মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এটাই ছিল একমাত্র উপায়।

পশ্চিমা এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাও জালালাবাদ শহরের পতনের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গতকাল শনিবার আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান শহর মাজার-ই-শরিফ দখল করে তালেবান। দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সফরের কয়েক দিনের মধ্যেই শহরটির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে গেল। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সব কটি বড় শহরে তালেবান তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। 

মাজার-ই-শরিফ আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহত্তম শহর। এটি দেশটির বালখ প্রদেশের রাজধানী। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শনিবার শহরটি প্রায় বিনা বাধায় দখল করে নেয় তালেবান। শহরটি দখলে সরকারি বাহিনীর বড় ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি তালেবানের। বালখের প্রাদেশিক আইনপ্রণেতা আব্বাস ইব্রাহিমজাদা এ তথ্য জানান। 

আফগানিস্তানের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র মাজার-ই-শরিফ। উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্তসংলগ্ন শহরটি গত শতকের নব্বইয়ের দশকে তালেবানের দখলে ছিল। 

সশস্ত্র সংগঠনটির যোদ্ধারা গতকাল দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লোগার প্রদেশ দখল করে। লোগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি বলেন, তালেবান যোদ্ধারা চর আসিয়াব জেলায় পৌঁছেছেন। তাঁরা কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) দূরে অবস্থান করছেন। ফলে, পশ্চিমানির্ভর আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের দ্বারপ্রান্তে এখন তালেবান। 

সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কাবুলে সাঁড়াশি আক্রমণ পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে তালেবান। পাশাপাশি দেশজুড়ে আরও প্রদেশ ও শহর দখলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে তারা। 

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে কাবুলের পতন ঘটতে পারে বা দেশটি আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি গৃহযুদ্ধে পতিত হতে পারে।