ভারী বৃষ্টিতে চীনের হেনান প্রদেশ প্লাবিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৭ পিএম, ২১ জুলাই,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০৪ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ভারী বৃষ্টিতে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হেনান প্রদেশের বিশাল অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় বিশেষ করে প্রদেশটির রাজধানী ঝেংঝাও সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। শহরটির পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় সেখানকার স্কুল ও হাসপাতালগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্ডারগার্টেনে শিশুরা আটকে পড়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাতে রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে।
আজ বুধবার (২১ জুলাই) চীনের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, হেনানে গত এক হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এক কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার ঝেংঝাও পীত নদীর তীরে অবস্থিত।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, বন্যা থেকে সুরক্ষা চেষ্টা ব্যাপক কঠিন হয়ে পড়েছে।
বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর এক লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অস্বাভাবিক বর্ষা মৌসুমের কারণে হেনানের লাখ লাখ বাসিন্দার জীবনের বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ভারী বর্ষণের কারণে বিশাল পীত নদীর অববাহিকাসহ আরও কয়েকটি নদীর পানি দ্রুত বেড়ে গেছে। এতে প্রদেশটির বেশ কিছু ট্রেন সেবা বাতিল করা হয়েছে। বহু মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফ্লাইট বাতিল কিংবা বিলম্ব করা হয়েছে।
এক ডজনেরও বেশি জনবহুল শহরের সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নাগরিকেরা তাদের পরস্পরের হাত আকঁড়ে ধরে পানির ভিতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আধাডোবা গাড়িতে ঠাসা একটি সড়কে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও একটি শিশুকে বন্যার পানি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬১৭ দশমিক এক মিলিমিটার বৃষ্টিতে সিক্ত হয়েছে ঝেংঝাও এলাকা। অথচ সেখানকার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৪০ দশমিক আট মিলিমিটার।
একজন আবহাওয়াবিদের উদ্ধৃতিতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঝেংঝাওতে গত তিন দিনের বৃষ্টিপাত এক হাজার বছরের মধ্যে কেবল একবার দেখা গিয়েছিল।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ঝেংঝাওয়ের পশ্চিমে লুইয়াং শহরে ইহেটান বাঁধে বিপৎসীমারি ২০ মিটার ওপর পানি চলে গেছে। যে কোনো সময় বাঁধটি ভেঙে পড়তে পারে।
ঝেংঝাওয়ের দ্য ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সাত হাজার শয্যার হাসপাতালটির বিদ্যুতের ব্যাকআপ সরবরাহ পর্যন্ত ফুরিয়ে গেছে।
মারাত্মকভাবে অসুস্থ ৬০০ রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। প্রদেশটিতে আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।