জার্মানি ও বেলজিয়ামে বন্যায় ১৮৩ জনের প্রাণহানি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:২৫ পিএম, ১৮ জুলাই,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪৯ এএম, ১২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ১৫৬ জন ও দক্ষিণ বেলজিয়ামে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন করে অতিবৃষ্টির কারণে দক্ষিণ জার্মানির অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড সীমান্তের নদীগুলোর পানি বাড়ছে। সেখানকার কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকটি অঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে কমছে।
বন্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে জার্মানির সরকারি স্থাপনায় জাতীয় পতাকা আজ রোববার পর্যন্ত অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, রোববার সকালে দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের একটি জেলায় অতিবৃষ্টিতে মাটিধস হয়েছে। দেখা দিয়েছে বন্যা। সেখানে একজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। আল্পস পর্বতমালার ঢালের নদীগুলো থেকে বৃষ্টির পানি পর্যটন এলাকা আলগাউসহ আশপাশের অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। সেখানে কয়েক শ উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন।
ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জার্মানির তিন প্রতিবেশী নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও সুইজারল্যান্ডের নদীগুলোতে পানির স্তর বেড়েছে। নেদারল্যান্ডসে বন্যার কারণে একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকটি অঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে কমছে। জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, সরবরাহ চালু হতে সময় লাগবে। এ ছাড়া কিছু কিছু এলাকায় পানি ও গ্যাস সরবরাহে বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
বন্যা থেকে সৃষ্ট বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছে জার্মান সরকার। বন্যার কারণে গত শুক্রবার জার্মানির কোলন শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ভূমিধসে বেশ কিছু বাড়ি ও একটি ঐতিহাসিক দুর্গের অংশবিশেষ ধসে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা নৌকায় করে ওই এলাকা থেকে ৫০ জনকে উদ্ধার করেছেন।
জার্মানির বন্যাকবলিত দুই প্রদেশে সহযোগিতার জন্য অন্য প্রদেশগুলো থেকে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছেছেন। শুধু নর্থ রাইন ভেস্টফ্যালিয়া প্রদেশের বিপর্যস্ত এলাকায় ১৯ হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। জার্মান সেনাবাহিনীর এক হাজার সদস্য এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করছেন।
জার্মানির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও সমন্বয় সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নর্থ রাইন ভেস্টফ্যালিয়ার ২৩ জেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাইনল্যান্ড-ফ্যালৎস রাজ্যের শুল্ড ও অহরওয়েলার জেলাটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার ৭০০ বাসিন্দা এখন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।
শনিবার সকালে হেইনসবার্গ জেলার রুর বাঁধ ভেঙে গেলে এলাকার একটি গ্রাম থেকে ৭০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। বন্যায় আইফেল ও ট্রিয়ার-সারবর্গ জেলায়ও যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বিপর্যস্ত অঞ্চলে সহযোগিতার জন্য আজ দুই প্রদেশের স্থানীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে তাঁর মুখপাত্র জানিয়েছেন। গতকাল জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করেন।