বালিশ-বিছানা-ত্রিপল-অ্যাম্বুলেন্স সঙ্গে নিয়ে দিল্লি অভিমুখে কৃষকরা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:৫২ এএম, ৩ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০৯:১১ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
কৃষকদের অবরোধে দিল্লি। ভারতের হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে রাজধানীতে এ যেন আর এক ‘কুরুক্ষেত্র’। দাবি আদায়ের লড়াইয়ে সময় লাগতে পারে অনেক। তার ওপর রয়েছে করোনা এবং উত্তর ভারতের কড়া শীত। এ সব কথা মাথায় রেখেই বেশ কয়েক মাসের সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়েই দিল্লির দরবারে উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা। গতমঙ্গলবার কৃষকদের বিক্ষোভ ষষ্ঠ দিনে অতিক্রম করলো। বিজ্ঞানভবনে এক দফা আলোচনাও হয়েছে সরকারের সঙ্গে। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নতুন ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহারে নারাজ কেন্দ্র। উল্টোদিকে অনড় কৃষকরাও। টানাপোড়েন যে আরও কত দিন চলবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই আগেভাগে পরিকল্পনা করে খাবার, পানি, বালিশ, বিছানা, কম্বল, ত্রিপল, ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্স- এ সব গুছিয়ে নিয়েই পথে নেমে পড়েছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের কৃষকরা। বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে রাজা-মহারাজাদের অভিযান। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দীর্ঘকাল ধরে সীমানা অবরুদ্ধ করে রাখার কৌশল। এমন সব অভিযানে সঙ্গে থাকত প্রচুর খাবারদাবার, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং নিত্য প্রয়োজনীয় অন্য জিনিসপত্রও। ইতিহাসে এমন বর্ণনা মেলে বিস্তর। কয়েক শ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানেও ঠিক যেন সেই ছবি। হরিয়ানা-দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানায় জিটি কার্নাল রোডের পাশে সাজানো বিক্ষোভকারীদের একের পর এক শিবির। দাঁত মাজার ব্রাশ, মাজন থেকে শুরু করে খাবার, পানীয় জল, ওষুধ বা ঘুমনোর জন্য প্রয়োজনীয় কম্বল, বিছানা-সবই মজুত কৃষকদের ট্রাক্টরে। জামাকাপড় কাচার জন্য রয়েছে ডিটারজেন্ট এবং সাবান। তা শুকনোর জন্য ট্রাক্টরে বাঁধা হয়েছে দড়ি। এক ঝলকে দেখলে মনে হবে রাজপথের পাশেই নতুন কোনও জনপদ। সকালে ঘুম ভাঙার পর বিক্ষোভকারীদের হাতে হাতে চা, ক্ষীর ইত্যাদি সরবরাহ করছে খালসা এড ফাউন্ডেশন। দেয়া হচ্ছে মিনারেল ওয়াটারের বোতলও। ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা অমরপ্রীত সিংহ বলছেন, খাবার ছাড়াও নারীদের জন্য আমরা ২০টি মোবাইল শৌচাগার বসিয়েছি। কৃষকরা এখানে দিনরাত বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আমরা চাই না ওরা কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হোন।
এদিকে পাঞ্জাবের কপূরথালা থেকে একদল কৃষক দিল্লি পৌঁছেছেন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। সঙ্গে রয়েছে বিপুল পরিমাণ ওষুধপত্রও। দিল্লির সীমানায় যেখানে অবরোধ চলছে, সেই সিঙ্ঘু এলাকায় খোলা হয়েছে স্বাস্থ্যশিবির। মঙ্গলবার দেশটির বিজ্ঞানভবনে কৃষক সংগঠনগুলোর ৩৫ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী সোম প্রকাশ। কিন্তু প্রথম দফার সেই আলোচনা ব্যর্থ।
সূত্র : আনন্দবাজার