ঘুষ লেনদেনে এশিয়ায় শীর্ষে ভারত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৪৭ এএম, ২৮ নভেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০১:২৯ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি থেকে সরকারি হাসপাতালের সিট। ‘টেবিলের নিচে’ মুহূর্তে একহাত থেকে আরেক হাতে চলে যাওয়া নোটের কল্যাণে চাইলেই মিলছে সব। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে ভারতের এমন চিত্রই উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদনের হিসাবে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেয়া হয় ভারতে। আর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কম্বোডিয়া। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এশিয়ার ১৭টি দেশের ২০ হাজার মানুষকে নিয়ে এক সমীক্ষা চালিয়ে এ চিত্র পেয়েছে সংস্থাটি। ভারতের ৩৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে। এটি এশিয়ার সর্বোচ্চ ঘুষের হার। এই হার নেপালে ১২ শতাংশ, বাংলাদেশে ২৪ শতাংশ, চীনে ২৮ শতাংশ এবং জাপানে ২ শতাংশ ছিল। সমীক্ষায় জানা গেছে, ভারতে ৪৭ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, গত ১২ মাসে দেশটিতে দুর্নীতি বেড়েছে। পাশাপাশি ৬৩ শতাংশ মানুষ এটাও মনে করেন যে, দুর্নীতি রুখতে সরকার ভালো কাজ করছে। অর্থাৎ মোদি সরকারের ওপর এখনও আস্থা রয়েছে অনেকের। সমীক্ষায় আরও দেখা যাচ্ছে, ভারতের ৪৬ শতাংশ মানুষ কোনো সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য উপর মহলে যোগাযোগ করেন। এদের মধ্যে ৩২ শতাংশ মনে করেন উঁচু জায়গায় যোগাযোগ না করলে তারা পরিষেবা পেতেন না।
পুলিশকে সবচেয়ে বেশি ঘুষ:
জরিপের জন্য জনগণকে পুলিশ, আদালত, সরকারি হাসপাতাল, পরিচয়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়া এবং বিদ্যুৎ, পানির মতো পরিষেবা পাওয়ার অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ (৪২ শতাংশ) মানুষ বলছেন, তাদের পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়েছে। ৪১ শতাংশ মানুষকে পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য সরকারি কাগজপত্র পেতে ঘুষ দিতে হয়েছিল। এসব ক্ষেত্রে কাজ হাসিল করতে ভারতের বহুসংখ্যক মানুষ তাদের ব্যক্তিগত যোগাযোগও ব্যবহার করেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।
ঘুষ নিয়ে ভোট দেয়ার চিত্রও উঠে এসেছে এই জরিপে। ভারতে এ হার ১৮ শতাংশ, অবস্থান চতুর্থ। ২৮ শতাংশ হার নিয়ে এ ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইন।
প্রথমবারের মতো, জরিপে সরকারি কর্মকর্তাদের পরিষেবার দিতে যৌনতা চাওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতে এর হার ১১ শতাংশ। ১৮ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ায়, শ্রীলঙ্কায় ১৭ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ১৫ শতাংশ।
জরিপের ফলে দেখা যায়, ভারতের ৬৩ শতাংশ মনে করেন তারা যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তবে তাদের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে।