আরও ১০ হাজার কোটি টাকা হারাল শেয়ারবাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৫ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩১ এএম, ৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২৪
টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের দরপতনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহের পতনে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা হারাল শেয়ারবাজার।
বড় অঙ্কের বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় তিন শতাংশ। আর লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ৯ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ৪ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা এবং ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এ হিসাবে টানা তিন সপ্তাহের পতনে ডিএসই ৩১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে।
অবশ্য এর আগে টানা সাত সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর বাজার মূলধন ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়ে। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। সে হিসেবে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়ার পর ৩১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৬২ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ১১১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ৭৩ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ চার সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৪২৪ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি টানা চার সপ্তাহ পতন হয়েছে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৬৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি কমে ১৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৮০ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ১৭ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও টানা চার সপ্তাহ পতনের মধ্যে রয়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ২৪ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কমে ১৯ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ১৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সবক’টি মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ২৪টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫২টির। আর ৯১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮১৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৮৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৭৫২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসই’র মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসই’র মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছেÑ বেক্সিমকো, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, রবি, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সামিট পাওয়ার, মীর আক্তার, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন এবং লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ।