জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি : প্রতি পাঁচজনের একজন মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার খাচ্ছেন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:২০ পিএম, ৩১ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:৪২ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
ক্রিসমাসের দিনগুলোতে খাবারের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় অনেক লোক খাবারের প্যাকেটে উল্লিখিত নির্দিষ্ট তারিখের পরে সেই খাবার খেয়েছেন। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ONS)-এর ডেটাতে এই তথ্য দেখানো হয়েছে। সমীক্ষায় প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক বলেছেন যে তারা ‘এক্সপায়ারি ডেট’ পেরিয়ে যাওয়া খাবার কিছুটা হলেও খেয়েছেন। পচনশীল খাবার যাতে নিরাপদে খাওয়া যায় তার জন্য এর গায়ে একটি লেবেলে একটি তারিখ উল্লেখ করা থাকে। ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি বলে যে, লোকেদের ‘ব্যবহারের তারিখের পরে খাবার খাওয়া উচিত নয়, এমনকি এটির স্বাদ এবং গন্ধ ঠিক থাকলেও, কারণ এটি আপনাকে খুব অসুস্থ করে তুলতে পারে। কারণ নির্দিষ্ট তারিখের পরে সেই খাবার রান্না করে খেলে বা ফ্রিজে রাখলে তার থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। যেগুলো শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।’ তাই সর্বোত্তম গুণমান, স্বাদ এবং টেক্সচার পাওয়ার জন্য তারিখ দেখেই পণ্যটি গ্রহণ করা উচিত। বেশ কয়েকটি সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ীরা খাবারের প্যাকেটে তারিখ লেখা লেবেল ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছেন। ১৮ ডিসেম্বর থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে পরিচালিত সমীক্ষায় জিজ্ঞাসা করা প্রায় এক-চতুর্থাংশ বলেছেন যে, তারা ‘এক্সপায়ারি ডেট’ পেরিয়ে যাওয়া খাবার খেয়েছেন।
ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি : ঙঘঝপোল, ৪,৭০০ জনেরও বেশি লোকের প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে জানতে পেরেছে যে, শীতের আবহাওয়া, এনার্জি বিল এবং ক্রমবর্ধমান খাদ্যের দামবৃদ্ধি মানব স্বাস্থ্যর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। প্রায় সাতজনের মধ্যে একজন (১৫%) প্রাপ্তবয়স্ক খুব চিন্তিত ছিলেন যে তাদের কাছে আরও খাবার কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই তার আগেই তাদের জমানো খাবার হয়তো শেষ হয়ে যাবে। দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৭০%) লোক যাদের আগের দুই সপ্তাহে খাবার ফুরিয়ে গিয়েছিল এবং আরও খাবার কেনার সামর্থ্য ছিল না, তারাও শীতের সাথে টিকে ওঠার লড়াই করছিলেন। প্রিপেমেন্ট মিটারে থাকা প্রায় ৪১% লোক বলেছেন যে, তারা উষ্ণ থাকার জন্য জীবন সংগ্রাম জারি রেখেছেন। ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম হারগ্রিভস ল্যান্সডাউনের সিনিয়র অর্থ বিশ্লেষক সারাহ কোলস বলেছেন : এই শীত মানুষের জীবন এবং তাদের স্বাস্থ্যের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছে। জ্বালানি খরচ এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির মূল কারণ। সরকারি তথ্য দেখায় যে, খাদ্যের দাম ডিসেম্বর থেকে বছরে ১৬.৮% বেড়েছে। দুধ, পনির এবং ডিমের মতো মৌলিক জিনিসগুলির দাম সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। চিনি, জ্যাম, মধু ও চকোলেটের পাশাপাশি নরম পানীয় ও জুসের দামও বেড়েছে। যদিও রুটি এবং খাদ্যশস্যের দাম ধীর গতিতে বেড়েছে। সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি, যা জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে সম্পৃক্ত, ডিসেম্বর থেকে বছরে ছিল ১০.৫%-যার অর্থ একটি সাধারণ পণ্যের দাম এক বছরে ১০.৫% বেড়েছে।
কীভাবে দাম বেড়েছে :
খাদ্য তালিকা দাম বৃদ্ধি (%)
কম চর্বিযুক্ত দুধ ৪৬
অলিভ অয়েল ৩৯.৫
হোল মিল্ক ৩৮.৫
চিনি ৩৮.৫
লিভার ৩৬.৮
পনির ৩২.৬
অন্যান্য খাদ্য পণ্য ৩২.৫
(বেকিং পাউডার, স্টক)
মাখন ৩২.৫
পাস্তা ২৯.৩
ময়দা (সব ধরনের) ২৯.১
জরিপে দেখা গেছে যে, এবারের শীত মানুষের জীবনযাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাই অনেকেই চাপে পড়ে ব্যবহারের তারিখের পরে খাবার খেয়েছেন। পাশাপাশি একটি বিষয় উঠে এসেছে সমীক্ষায়, তা হলো ২১% প্রাপ্তবয়স্করা রিপোর্ট করেছেন যে, তারা হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট, পরীক্ষা, বা ঘঐঝ-এর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করছেন।বিবিসির একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, উত্তরদাতাদের এক-তৃতীয়াংশ যারা ক্রিসমাস এবং ছুটির মরসুমে ঋণ নিয়েছিলো তারা সেই ঋণ আদৌ শোধ করতে পারবেন কিনা সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী নয়। ১০ জনের মধ্যে ৮ জনেরও বেশি মানুষ তাদের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় নিয়ে চিন্তিত, এমনকি চিন্তায় তাদের রাতের ঘুম যেতে বসেছে। মানুষ তাদের বিদ্যুতের বিল পরিশোধের জন্য খরচ কমানোর বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করছে। উত্তরদাতাদের অধিকাংশই হিটিং কমিয়ে লাইট বন্ধ করে খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।