শিল্পখাতে ঋণ বেড়েছে ২৩.১৪ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
শিল্পখাতে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। এতে একদিকে বেড়েছে বিনিয়োগ, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেষে শিল্পখাতের ঋণ বেড়েছে ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর একই সময়ে ঋণ আদায় বেড়েছে ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে করোনা মহামারির ধাক্কা সামলিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এতে শিল্পখাতও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর পর ব্যবসা-বাণিজ্যে থমকে গিয়েছিল। সে তুলনায় চলতি ২০২২ সালে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব কারণে বিভিন্ন সেক্টরের মতো শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হাওয়ায় ঋণ আদায়ও বেড়েছে।
ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণ বাড়া খারাপ নয়, এতে প্রবৃদ্ধি বাড়ে। সাধারণের আয়ের উৎস সৃষ্টি হয়। তবে, আদায় কতটা হচ্ছে, সেটা দেখার বিষয়। আদায় না হলে এ খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্যমতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। যা আগের বছর ২০২১ সালের একই সময়ে ছিল এক লাখ ৬ হাজার ৫৯৬ কোটি ৮২ টাকা। হিসাব বলছে এক বছরের ব্যবধানে শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা, শতকরা হিসাবে ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর তিন মাসের ব্যবধানে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২ দশমকি ২৪ শতাংশ। জুন প্রান্তিক শেষে এ খাতে ঋণ বিতরণ ছিল এক লাখ ২৮ হাজার ৩৮৪ কোটি ২ লাখ টাকা। শিল্পঋণ বিতরণের সঙ্গে আদায়ের হারও ভালো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিল্পখাতে ঋণ আদায় হয়েছে এক লাখ ১ হাজার ১২৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা তার আগের বছর ২০২১ এর একই সময়ে ছিল ৮২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে শিল্পখাতে ঋণ আদায় বেড়েছে ১৮ হাজার ৪৯০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। যা শতকরা হিসাবে ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর তিন মাসের ব্যবধানে শিল্পখাতে ঋণ আদায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে বিতরণ করা শিল্পঋণের মধ্যে ছয় লাখ ৯১ হাজার ৩৯৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এই অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের (সেপ্টেম্বর) তুলনায় ৭৭ হাজার ৫৬০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বকেয়া ছিল ছয় লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। শিল্পখাতে বিতরণ করা ঋণের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণের অঙ্ক ৯৫ হাজার ৯৪৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা গত ২০২১ সালের একই সময়ে ছিল ৮৪ হাজার ৮৩৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
প্রতিবেদন মতে, এক বছরের ব্যবধানে শিল্পখাতের মেয়াদি ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ৩ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিল্পখাতে মেয়াদি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। গত ২০২১ সালের একই সময়ে (সেপ্টেম্বর শেষে) ছিল ১৪ হাজার ৮৩৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে মেয়াদি ঋণ বিতরণের যথাক্রমে ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ, ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ ও ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে চলতি মূলধন ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯১ হাজার ৭৬২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর চলতি বছর অর্থাৎ এক বছর পর ২২ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে এক লাখ ১২ হাজার ৭০৩ কোটি ২০ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বৃহৎ ও ক্ষুদ্র শিল্পে চলতি মূলধন ঋণ বিতরণের অঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ২৬ দশমকি ২৫ শতাংশ ও ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও মাঝারি শিল্পে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। চলতি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো এক লাখ ৩১ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শিল্পঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে বৃহৎ ও ক্ষুদ্র শিল্পে যথাক্রমে ২৫ দশমকি ২৮ শতাংশ ও ৩৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বিনিয়োগ বেড়েছে। তবে মাঝারি শিল্পে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমেছে।