খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহ চুক্তিতে অনীহা মিলারদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৯ পিএম, ৮ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫০ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
‘শস্যভান্ডার’ হিসেবে পরিচিত রংপুরে খাদ্য বিভাগ মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহ করার চুক্তি করছেন না।
আজ বৃহস্পতিবার খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চালকল মালিকদের চুক্তি করার শেষ দিন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার পর্যন্ত জেলার ৭শ ২২ জন মিলারের মধ্যে মাত্র ১৫ জন চুক্তি করেছেন। ফলে চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় এক লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি উৎপাদিত হয়েছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় চলতি আমন মৌসুমে সারা দেশের মতো রংপুর জেলার আট উপজেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ৯ হাজার ৪৩ মণ ধান এবং খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত ৭শ ২২ চালকল মালিকের কাছ থেকে ১৫ হাজার ৮শ ৩০ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ৮ ডিসেম্বর হচ্ছে চালকল মালিকদের খাদ্য বিভাগের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পে অর্ডার জমা দিয়ে চুক্তি সম্পাদন করার শেষ দিন। এ জন্য অনেক আগেই ৭শ ২২ চালকল মালিককে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের নামে চাল কেনার বরাদ্দপত্র দিয়েছে রংপুর খাদ্য অধিদফতর। বার বার তাগাদা দেয়ার পরেও চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে অনীহা প্রকাশ করে আসছেন। চালের বাজার মূল্য খাদ্য বিভাগের মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহের চুক্তি করছেন না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম চালের বৃহৎ মোকাম রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় চালকল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রিপন চৌধুরীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘খাদ্য বিভাগ ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কিনবে কিন্তু বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সরকার যদি চালের ক্রয় মূল্য কেজি প্রতি দু টাকা বৃদ্ধি করে তাহলে মিলাররা চাল সরবরাহ করতে পারবেন। একই কথা জানালেন চালকল মালিক সুলতান মিয়া, আলমগীর চৌধুরীসহ অনেকেই। এ বিষয়ে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৫ জন চালকল মালিক চুক্তি করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার চুক্তি সম্পাদনের শেষ দিন। আশা করছি, এদিন অধিকাংশ চালকল মালিক চুক্তি সম্পাদন করবেন। ইতিমধ্যে দু হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খাদ্য বিভাগের নির্ধারিত সময় ২৮ ফ্রেরুয়ারির মধ্যে চাল কেনা সম্ভব হবে। ধান কেনার ব্যাপারে তিনি জানান, আপসের মাধ্যমে জেলার ৮ উপজেলা থেকে ৯ হাজার ৪৩ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনা হবে। এখনও ধান কেনা সম্ভব হয়নি।