ফের বেড়েছে চাল, খোলা সয়াবিন তেলের দাম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৩২ এএম, ৩০ জানুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পর টানা তিন সপ্তাহ ধরে চালের দাম অল্প হলেও কমছিল। কিন্তু এই সপ্তাহে ফের বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। বাজারে গত সপ্তাহে যে চালের কেজি ছিল ৫৫ টাকা, এখন সেই একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা দরে। আর ৫০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়। ৪৫ টাকা কেজিতে নেমে আসা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। তবে দুই-একদিনের মধ্যে চালের দাম কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ প্রসঙ্গে কাওরানবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, চাল সরবরাহে কমতি থাকায় এই সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে। দুই একদিনের মধ্যে আমদানির চাল বিক্রি শুরু হলে দাম কমে আসবে। তবে এটাও সত্যি, দাম খুব বেশি কমার সুযোগ নেই। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসাবে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এছাড়া অস্বাভাবিক বাড়ার পর খোলা সয়াবিনের দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও এই সপ্তাহে ফের বেড়েছে। বোতলে ভরা সয়াবিন আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে স্বস্তি বিরাজ করছে সবজির বাজারে। বিশেষ করে পেঁয়াজ ও আলুর দাম আরও কমে গেছে। আলোচিত পেঁয়াজ এখন ৩০ টাকা কেজিতে নেমেছে। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ১৭ টাকা কেজিতে। রাজধানীর কাওরানবাজার, মগবাজার কাঁচাবাজার, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২২-১২২ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা। রাজধানীর মানিকনগর এলাকার ব্যবসায়ী রব্বান আলী বলেন, খোলা সয়াবিন এখন ১২২ টাকা কেজি বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। বোতলে ভরা (৫ লিটার) সয়াবিনের দাম কমে গেছে। তিনি বলেন, সয়াবিনের পাশাপাশি পাম অয়েলের দাম কমেছে। তবে এক লিটার ওজনের সয়াবিনের দাম আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পুরান ঢাকার মৌলভী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী গোলাম মাওলা বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে আমাদের বাজারে দাম বাড়ে। আবার বিশ্ববাজারে দাম কমলে এখানেও দাম কমে। তবে শীতের সময় সয়াবিন জমাট বেঁধে যায়। যার ফলে বাজারে সরবরাহ কমে গিয়ে সয়াবিনের দাম বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো মিলগেটেই দাম বাড়িয়ে দেয়।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে সবচেয়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। কোনও কোনও ব্যবসায়ী দুই কেজি পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকাও রাখছেন। অপরদিকে পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আলু-পেঁয়াজের মতো দাম কমেছে পাকা টমেটোরও। এক সপ্তাহ আগে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া এই সবজিটি এখন পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে।
বাজারে স্বস্তি দিচ্ছে অন্যান্য সবজির দামও। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকায়। প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। এছাড়া মুলা ১০ থেকে ১৫ টাকা, গাজর ১৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ১০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মানিকনগর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ ভালো। পেঁয়াজ ও আলুর দাম আরও কমে গেছে। এছাড়া অন্য সব জিনিসের দামও কমে এসেছে। এদিকে টিসিবি’র হিসাবে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ শতাংশ। ২০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে আমদানি করা পেঁয়াজ। দাম কমার তালিকায় রয়েছে ব্রয়লার মুরগি। গত সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ৩ টাকা। ১২৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে।
খুচরায় সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকা কেজি। বেড়েছে প্যাকেটজাত চিনির দামও। বাজারে প্রভাব নেই আমদানি করা চালের। চাল বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দরেই। কয়েক দিনের ব্যবধানে আবারো বাড়লো খোলা সয়াবিন তেলের দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে আমদানি করা চাল পাচ্ছেন না তারা। কম দামের চাল পাইকারিতে সহজলভ্য না হলে খুচরায় দাম কমবে না বলেও জানালেন খুচরা বিক্রেতারা।