রিজার্ভ কমে ৩৭ বিলিয়ন, কারণ জানতে চাইলো বিশ্বব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৪ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৩৬ এএম, ১২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির নানা উদ্যোগের পরেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। রিজার্ভের পরিমাণ হতে যাচ্ছে ৩৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে আট বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে মজুত এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে চার মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। বৈদেশিক রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশ কি ভাবছে, সামনে এটা বাড়বে না কমবে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে রিজার্ভ কমার কারণও জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। এসব জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
আজ সোমবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার রিজেওনাল ডিরেক্টর ম্যাথিউ ভারগিস। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের বাজেট সাপোর্ট দিচ্ছে। এটা দিতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা জানতে চেয়েছে আমরা কি অবস্থায় আছি। বৈদেশিক রিজার্ভ নিয়ে আমরা কি ভাবছি এটা বাড়বে না কমবে এটাও জানতে চেয়েছে। সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে জানতে চেয়েছে ক্ষুদ্র অর্থনীতি কোন অবস্থায় আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছি। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভ যে কমলো এটা কমার কারণটা কি? এটা কিভাবে উঠাতে পারবো এসব বিষয়ে সংস্থাটি জানতে চেয়েছে। আমাদের আগামী দিনগুলোতে বাজেট ও পরিকল্পনার সমন্বয়টা হচ্ছে কিনা। প্রকল্প প্রণয়নে কিভাবে সময়টা কমিয়ে আনতে পারি। প্রকল্প প্রণয়নে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়েও বিশ্বব্যাংক জানতে চেয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের মূল্যস্ফীতি যতটা বাড়ার কথা ছিল ততোটা বাড়েনি। খাদ্যপণ্য বেশি বাড়েনি। মূল্যস্ফীতি কমাতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক আমদানি কমিয়েছি। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার যে ব্যবধান ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। এটা মেটাতেই রিজার্ভে হাত দিতে হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে তা ভালো হচ্ছে। দুই মাসে ৩৫ শতাংশ হারে এক্সপোর্ট বেড়েছে। রেমিটেন্স অফিশিয়াল লাইনে ভালো হচ্ছে। প্রতি মাসে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো রেমিটেন্স পাচ্ছি। এর আগে এক সঙ্গে কখনো দুই বিলিয়ন ডলার পাইনি। আমদানি কমছে কিন্তু রফতানি বাড়ছে। আমরা অর্থনীতি ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় স্বস্তির দিকে যাচ্ছি। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার বাজারও স্থিতিশীল হবে। রিজার্ভ আর কমবে না। উৎপাদনশীল কোনো খাত ব্যাহত হয়নি। কৃষি ও শিল্পে সমানতালে উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদন ব্যবস্থা ঠিক আছে। বাইরে মূল্যস্ফীতি বেশি বলেই আমাদের এখানে বেড়েছে। দেশের পুরো অর্থনীতি আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে বাজেটে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় কি করেছি। কিভাবে প্রকল্পে খরচ কমিয়ে সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা যায়। আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি। গ্রিন ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিং গ্রোথে জোর দেবে বাংলাদেশ। ডেল্টাপ্ল্যানও গ্রিণ গ্রোথের একটা অংশ। রেভিনিউ ১৬ শতাংশ বেড়েছে সামনে আরও বাড়বে। আমরা ভ্যাট আইনও সংস্কার করছি। এসব বিষয়ে বিশ্বব্যাংক জানতে চেয়েছে। তবে শর্তের বিষয়ে কিছু বলেনি সংস্থাটি। সরকারে উন্নয়ন প্রকল্পের গতির প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেগা প্রকল্পসহ দেশের সব প্রকল্পের গতি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা গ্রিন গ্রোথে গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে ব্যবস্থাপনার অদক্ষতাই প্রকল্প বাস্তবায়নের বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে উন্নয়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মো. মামুন আল রশীদ, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সচিব) ড. কাওসার আহমেদ প্রমুখ।