২০ প্রকল্পের ৪৩ বিলিয়ন ডলারই বৈদেশিক ঋণ : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ২১ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২১ এএম, ৩০ অক্টোবর,
বুধবার,২০২৪
বাংলাদেশে ২০টি মেগা প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ৭০ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদেশি ঋণই ৪৩ বিলিয়ন ডলার। প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের যে হার, তাতে অনেকগুলো ২০৩০ সালেও শেষ হবে না। কিন্তু ২০২৪ সাল থেকেই এসব প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু করতে হবে। প্রথম চাপটা আসবে চীন থেকে। এরপর রাশিয়া, তারপর জাপান। এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে অর্থনৈতিক বিপর্যয় আসার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশের বৃহৎ ২০টি মেগা প্রকল্প : প্রবণতা ও পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা ৭০ বিলিয়ন ডলারের আলোচনা করছি, যা দিয়ে ২০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসব প্রকল্পের মোট দায়দেনা পরিস্থিতি কতো? এতে দেখা যায়, স্থানীয়ভাবে আছে ২৭ বিলিয়ন ডলার ও বিদেশি অর্থায়ন ৪৩ বিলিয়ন ডলার। এর দুই-তৃতীয়াংশ অর্থে এসেছে বিদেশ থেকে। বাকি ২৫ শতাংশের কম দেশীয় টাকা। ২০ প্রকল্পের ১৫টাই ভৌত অবকাঠামো উল্লেখ করে সিপিডির ফেলো বলেন, এর মধ্যে ৫০ শতাংশ ব্যয় হয়েছে রাস্তাঘাটে। ৩৫-৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় হয়েছে। বাকি অর্থ স্বাস্থ্যসহ অন্যখাতে দেয়া হয়। এসব প্রকল্পে বড় ধরনের ধাক্কা দেয়ার প্রবণতা আছে। আমাদের সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এজন্যই ২০টি মেগা প্রকল্প বেছে নিয়েছি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন-১, মাতাবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রজেক্ট, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন-৫, লাইন-৬, পদ্মা ব্রিজ রেল সংযোগ, ফোর্থ প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, এক্সপানশন হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর প্রকল্প, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ডিপিডিসির পাওয়ার সিস্টেম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে ব্রিজ প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প, সেফ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প ও কোভিড ইমারজেন্সি রেসপন্স ও প্যানডেমিক প্রিপারেডেন্স প্রকল্প।
এ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রকল্পগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় বিনিয়োগ। বাজেটের ৩০ শতাংশ অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ গেছে মেগা প্রকল্পখাতে। মেগা প্রকল্পগুলো যতই যৌক্তিক হোক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষাখাতকে অবহেলার সুযোগ নেই। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১১টি প্রকল্পের বাস্তবায়নের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি। ২০১৮ সালের পর নেয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের হার দুর্বল। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ১০ এর নিচে।