২৫ টাকায় নেমেছে পেঁয়াজ, বেগুন-শসা-মাছের দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫০ এএম, ৯ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৮ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজধানীর বাজারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা পেঁয়াজের দাম গেল এক সপ্তাহে আরও কমেছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজের মতো কমেছে সজনের ডাঁটা ও সোনালি মুরগির দাম।
তবে পেঁয়াজ, সজনের ডাঁটা, সোনালি মুরগির দাম কমলেও রোজার প্রভাবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন ও শসা। বেগুনের কেজি ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আর শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে ইলিশ ও রুই মাছের।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ২৫ টাকা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৩০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা।
পেঁয়াজের এ দাম কমার বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মাঝে হুট করে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। সে সময় পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা বিক্রি করেছি। হালি পেঁয়াজ আসার পর থেকে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আড়ত থেকে কম দামে কিনতে পারায় কম দামে বিক্রি করছি।’
কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন পেঁয়াজের সংকট নেই। পেঁয়াজের আমদানিও অনেক। এ কারণে দাম কমেছে। এখন এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) পেঁয়াজ এক শ টাকা বিক্রি করছি। পেঁয়াজের দাম হয়ত আর কমবে না। তবে এ দাম আরও কিছুদিন থাকবে।’
পেঁয়াজ কিনতে আসা মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘২০০ টাকা দিয়ে দুই পাল্লা পেঁয়াজ কিনেছি। অর্থাৎ ২০ টাকা কেজি পড়েছে। ১৫-২০ দিন আগে পেঁয়াজের কেজি কিনেছিলাম ৪৫ টাকা দরে। এই প্রথম রোজায় পেঁয়াজের দাম কমতে দেখছি। পেঁয়াজের দাম কমায় ভালো লাগছে। কিন্তু অন্যান্য পণ্যের দাম তো অনেক বেশি। অন্যান্য পণ্যের দাম কমলে আরও বেশি স্বস্তি পেতাম।’
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজার প্রভাবে গত সপ্তাহেই বেগুনের কেজি ১০০ টাকায় ওঠে। গত এক সপ্তাহে বেগুনের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। ব্যবসায়ীরা প্রকারভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৭০-১০০ টাকা। বেগুনের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। এক কেজি শসা কিনতে ৬০-৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজিও।
পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে কিছুদিন আগে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া সজনে ডাঁটার দাম কমে ৮০ টাকায় নেমেছে। সামনে এ সবজির দাম আরও কমবে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।
রামপুরার ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে সজনে ডাঁটার কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন সজনে ডাঁটা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কয়েকদিনের মধ্যে দাম আরও কমে ৫০ টাকা হতে পারে।’
অন্যদিকে মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে রুই ও ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। এক সপ্তাহে আগে রুই মাছের কেজি ছিল ২৬০-৪৫০ টাকার মধ্যে। কিছুদিন আগে ১০০০-১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৬০০ টাকায়। অন্যান্য মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছের দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ছাইদুর বলেন, ‘রোজায় ইলিশ ও রুই মাছের চাহিদা বেড়েছে। এই কারণে হয়ত এ দুটি মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।’
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৭০-১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩১০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩১০-৩৪০ টাকা।
গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতো ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে মহল্লার গলির কিছু ব্যবসায়ী গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দামে পরিবর্তন আসেনি। ফার্মের মুরগির ডিমও গত সপ্তাহের মতো ১১০-১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।