৭ বছর পর ফের হলমার্কের জালিয়াতি অনুসন্ধানে দুদক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:০৪ এএম, ১২ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২১ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দীর্ঘ সাত বছর পর ফের হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবার নন ফান্ডেড টাকা আত্মসাৎ নিয়ে কাজ করছে তারা। ফলে আবারও আলোচনায় সেই হলমার্ক গ্রুপ।
দুদক সূত্রে জানা যায়, সোনালী ব্যাংক থেকে ছলে-বলে-কৌশলে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে হলমার্ক গ্রুপের বিরুদ্ধে। আর যা সম্ভব হয়েছে ওই সময়ের ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে। এসব টাকা আত্মসাৎ হয় ফান্ডেড এবং নন ফান্ডেড উভয় খাত থেকে। আর এই অর্থ তথা ফান্ডেড টাকা আত্মসাৎ করায় দুদক এ পর্যন্ত ১১টি মামলা করেছে। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর এই মামলাগুলো করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর মামলার চার্জশিটও দেয় দুদক। তবে এবার নন ফান্ডেড এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামল দুদক। যার জন্য দুদক আট সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছে।
আরও জানা যায়, সোনালী ব্যাংককে গ্যারান্টার করে দেশি-বিদেশি ৩৭টি ব্যাংক থেকে এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছিল হলমার্ক গ্রুপ। এর আগে একাধিকবার এই অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অজানা কোনো এক কারণে বারবার থেকে যায় অনুসন্ধান কার্যক্রম। তবে এবার দুদক বলছে, দ্রুতই দেওয়া হবে অনুসন্ধান প্রতিবেদন।
২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ঋণের নামে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হলমার্ক গ্রুপ। এই হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ওই সময় দেশজুড়ে তৈরি হয় আলোচনা। এর মধ্যে দেড় হাজার কোটি টাকা তোলা হয় সরাসরি সোনালী ব্যাংক থেকেই জালিয়াতি করে। ২০১২ সালে হলমার্ক ও ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ৫৬ জনকে আসামি করে সেই ফান্ডেড অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মোট ৩৮টি মামলা করে দুদক। তবে এর বাইরে যে নন ফান্ডেড অর্থ তার অনুসন্ধান আর এগোয়নি। যদিও এর মাধ্যমেই সোনালী ব্যাংককে গ্যারান্টার করে দেশি-বিদেশি ৩৭টি ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় আরও ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
২০১৪ সালের এপ্রিলে হলমার্ক গ্রুপের ননফান্ডের অর্থ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। তবে সেসময় সোনালী ব্যাংকের অনুরোধে ননফান্ডেড সেই অর্থের অনুসন্ধান সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইখতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চাই এই হলমার্ক জালিয়াতিতে যে দুর্নীতি হয়েছে দুদক সেটা আরও পরিষ্কার করুক। যেগুলোর অনুসন্ধান বাকি রয়েছে সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে শেষ করুক। কেননা দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। দুদক আগের চেয়ে ভালো করছে। আমরা আশাবাদী তারা দ্রুতই হলমার্ক জালিয়াতির বিষয়টি আরও খোলাসা করবে।’
অপরদিকে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘কমিটি পুনর্গঠনের অর্থ হচ্ছে, যে ৪১টি ব্যাংক ও শাখায় এই আর্থিক লেনদেনগুলো হয়েছে সেখানে জাল জালিয়াতির কোনো আশ্রয় নেওয়া হয়েছে কিনা, কোন দুর্নীতি ঘটেছে কিনা সেগুলো ফের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। এই অনুসন্ধান কমিটি কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এরপর সেই প্রতিবেদন কমিশন পর্যলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’