বিশ্বেজুড়ে পুঁজিবাদের সংকট চলছে : সিরাজুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৭ এএম, ১২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:২৭ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, আমরা একটা অস্বাভাবিক সময়ের মধ্যে আছি। এখন পৃথিবী চরম সংকটের মধ্যে চলে এসেছে। এটা করোনাভাইরাসজনিত সংকট নয়। এটা পুঁজিবাদের সর্বশেষ সংকট। এখন মানুষের সভ্যতা ও সাম্যের প্রশ্ন এসেছে। মানুষিক এই পুরনো ব্যবস্থাকে কীভাবে রক্ষা করবে? ব্যক্তি মালিকানার পৃথিবীর যে হাজার হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস সে ইতিহাসকে প্রলম্বিত করবে? এটা বোঝা গেছে, এই পথে ধ্বংস অনিবার্য।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখন মানুষকে বলা হচ্ছে অসামাজিক হও। এবং মানুষকে বাঁচার জন্য অসামাজিক হতে হচ্ছে। অন্য মানুষদের থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে, মুখোশ পরতে হচ্ছে, পরিচয় নিন্ডিহ্ন করতে হচ্ছে। আদিম যুগের অসহায় ও একাকীত্ব এবং ভীতির যুগে আমাদের ঠেলে দিচ্ছে এই পুঁজিবাদ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এসব অনেক আগেই জানতেন। তিনি যখন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বলছেন তখন তিনি জানতেন এটার ভিতরে পুঁজিবাদ রয়েছে। তিনি পুঁজিবাদের লড়াইটাই করছিলেন।
তিনি বলেন, আজকে এই পৃথিবীতে পুঁজিবাদের চরম সংকট, ফ্যাসিবাদের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে মানুষ এই গ্রহতে বসবাস করতে পারবে কিনা? মানুষ নয় কেবল কোনো প্রাণী বসবাস করতে পারবে না। কারণ এই গ্রহের প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এসবের পিছনে রয়েছে পুঁজিবাদ। মওলানা এজন্যই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। কাজেই এখন পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলন হচ্ছে এবং প্রত্যেক দেশেই এটা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের চেয়ারম্যান আসিফ নজরুল বলেন, ভাসানীকে অপ্রাসঙ্গিক বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের বলা হয় পুরো বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন একজন ব্যক্তি। পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর মতো এত বড় একটি বাহিনী এবং রাজনৈতিক শক্তিকে কোনভাবেই কি এককভাবে রুখে দেয়া সম্ভব ছিলো? অথচ ভাসানীসহ আরো কত মানুষের অবদান আছে এই স্বাধীনতার পিছনে। তাদের বাদ দিয়ে শুধু একজনের কীর্তি গাওয়া হয়। এজন্যই তো অন্যরা সুযোগ পেলে তার কীর্তি মুছে ফেলার চেষ্টা করে। এই ধরনের জঘন্য মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। দেশে জাতীয় আইডলের অভাব আছে। মওলানা ভাসানী থাকতে আর কোনো আইডল লাগে নাকি? আমাদের সবার উচিত মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও রাজনীতিকে খুব সুন্দরভাবে সবার কাছে পৌঁছে দেয়া।
আলোচনা সভায় মওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, পত্রপত্রিকায় বলা হয় বঙ্গবন্ধু না থাকলে দেশ স্বাধীনতা না। আমি তার অবদানের কথা অস্বীকার করছি না, তবে এটাকে ইতিহাস বিকৃতি হিসেবে দাবি করছি। প্রথম বাংলাদেশ বা আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের কথা কোনো এক সম্মেলনে বলেছিলেন মওলানা ভাসানী। তখন ওই সম্মেলনের মঞ্চ থেকে কিছু মানুষ আলাদা হয়ে আলাদা মিটিং করে বলার চেষ্টা করেছিলেন মওলানা ভাসানী পাকিস্তান ভাঙ্গার চেষ্টা করছেন। পরবর্তীতে ভাসানীর থেকে সহযোগিতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষকে এক করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ হত না, এটা ভুল।