৬৫ লাখ কোটি টাকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৯ এএম, ৩০ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০২:৪৫ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন) চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী এবং এনইসি’র চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষ ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত এনইসি’র সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য জ্যেষ্ঠ সচিব আসাদুল ইসলাম ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তারা জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন হবে মোট ৬৪ হাজার ৯৫৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিদেশি উৎসহ থেকে আসবে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ অর্থের সংস্থান প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিনিয়োগে আমরা অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর নির্ভর করছি। এটি প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ঠিক বিপরীত। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা ৮৮ শতাংশ বিদেশি অর্থায়ন এবং ১২ শতাংশ দেশীয় অর্থায়নের ওপর নির্ভর করেছিলাম। এবার আমরা উল্টোটা করছি।’
এদিকে মোট বিনিয়োগের মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ১২ হাজার ৩০১ দশমিক ২ বিলিয়ন টাকা, যার আকার ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বেসরকারি খাত থেকে আসবে ৫২ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা, যার আকার ৮১ দশমিক ১ শতাংশ।
পরিকল্পনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অষ্টম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনায় ১ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার কর্মসংস্থানের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ লাখ ৫ হাজারের কর্মসংস্থান হবে বিদেশে। এই সময়ে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ দশমিক ০১ মিলিয়ন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ দশমিক ২৬ মিলিয়ন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে সরকার।
বিবিএসের রিপোর্ট তুলে ধরে জানানো হয়, এ সময় ১৮ থেকে ১৯ লাখ লোক বছরে শ্রম বাজারে যুক্ত হবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাদের সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২৫ অর্থবছরে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নিয়ে আসা হবে। আর ২৫ অর্থবছরে চরম দারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টেকসই উন্নয়ন গোল (এসডিজি) বাস্তবায়নে সরকারের আলাদা কোনও পরিকল্পনা নেই। এই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাই হবে এসডিজি বাস্তবায়নের ভিত্তি।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কিছু অর্থনৈতিক সূচকের প্রক্ষেপণ:
ক. বছরে গড় জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশ হারে ও মেয়াদান্তে হবে ৮.৫১ শতাংশ।
খ. মেয়াদান্তে দারিদ্র্যের হার ১৫.৬ শতাংশে ও অতি দারিদ্র্যের হার ৭.৪ শতাংশে দাঁড়াবে।
গ. কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ১১.৩৩ মিলিয়ন, যার মধ্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে ৩.২৫ মিলিয়ন এবং শ্রমবাজারে যুক্ত হবে ৭.৮১ মিলিয়ন শ্রমশক্তি।
ঘ. কর-জিডিপি’র অনুপাত ১২.৩ শতাংশ।
ঙ. মেয়াদান্তে প্রত্যাশিত গড় আয়ু হবে ৭৪ বছর।
চ. ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা এবং মেয়াদান্তে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।