যে ৮ কারণে কারদাতাকে অডিটের মুখোমুখি হতে হয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৮ এএম, ১ নভেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৬ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ব্যক্তির আয় বিবরণী ফরম পূরণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী একজন করদাতাকে তার আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাব জমা দিতে হয়। অনেক সময়ই রিটার্ন ফরম যথাযথভাবে পূরণ ও সংশ্লিষ্ট কাগজ জমা না দিলে নানা জটিলতায় পড়তে হয়। তাই বিবরণী তৈরিতে একটু সচেতন হলে এবং কিছু সতর্কতা মানলে আয়কর মামলা কিংবা অডিট এড়ানো সম্ভব। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ৮২বিধি অনুযায়ী ইউনিভারসাল সেলফ অ্যাসেসমেন্টের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু কারণে করদাতার আয়কর বিবরণী অডিটে পড়তে পারে। আয়কর বিবরণী জমা দেয়ার পর আয়কর মামলা বা অডিটের সম্ভাব্য কারণগুলো হলো-
১. ব্যবসার ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী করবর্ষে প্রদর্শিত আয়ের চেয়ে পরবর্তী বছর কম আয় প্রদর্শন করলে।
২. কর অব্যাহতি পাওয়া যায় এমন আয় প্রদর্শন করেছেন কিন্তু কাগজপত্র জমা না দিলে।
৩. কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকার বেশি পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করেছেন। তার সপক্ষে যথাযথ কাগজ যেমন- যে ব্যাংকিং চ্যানেলে নিয়েছেন তার প্রমাণ বা হিসাব বিবরণী যথাযথভাবে দাখিল না করা হলে।
৪. কোনো কিছু উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছেন, কিন্তু তার সপক্ষে যথাযথ কোনো প্রমাণপত্র দাখিল না করলে।
৫. এমন কোনো আয় প্রদর্শন করেছেন, যা আয় হিসেবে কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত কিংবা হ্রাসকৃত হারে ট্যাক্স প্রযোজ্য।
৬. নতুন রিটার্নের ক্ষেত্রে ব্যবসার আয়ের ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক মূলধন গ্রহণের পরিমাণের ২০ শতাংশের কম আয় প্রদর্শন করলে।
৭. ব্যবসার প্রারম্ভিক মূলধন হিসেবে যে পরিমাণ অর্থ উল্লেখ করা হয়েছিল তা পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে স্থানান্তর করলে।
৮. অকৃষি সম্পত্তিতে নতুন কোনো বিনিয়োগ থাকলে। যেমন- বাড়ি নির্মাণ; কৃষি সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও কৃষি আয় প্রদর্শন না করা ইত্যাদি কারণে একটি আয়কর রিটার্ন অডিটের জন্য নির্বাচিত হতে পারে।
এ বিষয়ে দীর্ঘদিন আয়কর আইনজীবী হিসেবে কর্মরত ইমরান গাজী বলেন, সবার উচিত জেনে বুঝে আয়কর বিবরণী জমা দেয়া। তবেই আয়কর বিষয়ক ঝামেলা মুক্ত থাকবেন। আমাদের কাছে অডিট সংশ্লিষ্ট সমস্যা নিয়ে করদাতা বেশি আসেন। আসলে আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ করার সময় সচেতন না হলে অযথা হয়রানির মুখোমুখি হতে হয় করদাতাদের। তাই করদাতাদের উচিত আয়কর আইন জানেন এমন কারও সহায়তা নেয়া। আয়কর বিবরণী তৈরিতে সচেতন হলে ও কিছু সতর্কতা মানলে মামলা ও অডিট অনেকটা এড়ানো সম্ভব।
অডিটে আপত্তির বিষয়ে আইনে যা আছে : কোনো আয়কর রিটার্নে অডিট আপত্তি হলে প্রথমে করদাতাকে অবহিত করে নোটিশ দেয়া হয়। সেই সঙ্গে করদাতাকে শুনানির জন্য সুযোগ দেয়া হয়। করদাতা বা তার প্রতিনিধি শুনানিতে হাজির হলে উপ-কর কমিশনার ৮৩ ধারায় মামলা নিষ্পত্তি করেন। করদাতা শুনানিতে উপস্থিত না হলে উপ-কর কমিশনার ৮৪ ধারায় একতরফা মামলা নিষ্পত্তি করে থাকেন।